আনোয়ার হেসেন-কিশোরগঞ্জ (নীলফামারী)প্রতিনিধিঃ
কৃষিকে সমৃদ্ধি ও নিজেকে আত্মসাবলম্বী করতে নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার কৃষকেরা কৃষিতে আনছেন নানা বৈচিত্রতা।গতানুগতিক ফসল চাষাবাদের পাশাপাশি ঝুঁকছেন লাভজনক ভিনদেশি ফসল আবাদের দিকে।এবার ভিনদেশি ফসল হিসেবে বিভিন্ন গ্রামের কৃষকেরা চাষ করেছেন উত্তর আমেরিকা,মালেশিয়াসহ মধ্যেপ্রাচ্যের নানা দেশের অতিপুষ্টিমান ও উচ্চমূল্যের সবজি স্কোয়াশ।স্কোয়াশ দেখতে শসার মত কুমড়া জাতীয় শীতকালিন সবজি।কৃষকরা বলছেন,এ সবজি অতিপুষ্টিকর,সুস্বাদু,স্বল্পমেয়াদি,দ্রুতবর্ধনশীল,অধিক ফলন ও লাভজনক।নতুন সবজি হিসেবে বাজারে ভোক্তার নিটক চাহিদাও বেশভাল।এতে ভাল দামে বিক্রি করে তারা লাভবান হচ্ছেন।এতে অন্য কৃষকেরাও স্কোয়াশ চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়,গাড়াগ্রাম ইউপির ধাইজান পাড়া গ্রামের অবসরপ্রাপ্ত ভ’মি অফিসের নাজিরকাম ক্যাসিয়ার সিরাজুল ইসলাম চাকরি শেষে কৃষিতে উঠে পড়ে লেগেছেন।তিনি অন্যান্য ফসলের পাশাপাশি এবার ৪০ শতাংশ নাবি আলুর জমিতে সাথি ফসল হিসেবে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে স্কোয়াশের বীজ বুনেন।এছাড়াও একই গ্রামের আছাহাব ৩০ শতাংশ ও কিশোরগঞ্জ সদর ইউপির তেলি পাড়া গ্রামের জিন্নুর ২০ শতাংশ জমিতে স্কোয়াশ চাষ করেছেন।যা কয়েক সপ্তাহ ধরে উত্তোলন করে বাজারে প্রতি পিচ সবজি (ফল) ২৫/৩০ টাকা দরে বিক্রি করে ভাল লাভবান হচ্ছেন।এসময় চাষি সিরাজুল বলেন,অন্য ফসল থেকে স্কোয়াশ চাষে রোগবালাই ও খরচ খুবেই কম।বীজ বপনের এক মাসের মধ্যে ফুল আসে।দেড় মাসের মাথায় ফল কাটার উপযোগী হয়।প্রতিটি গাছে ৮থেকে ১০টি ফল ধরে।দ্রুতবর্ধনশীল হওয়ায় প্রতি সপ্তাহে তা তুলে বিক্রি করা যায়।প্রতিটির ওজন হয় দেড় থেকে ২ কেজি।গাছ লাগানোর প্রায় ৩ মাস পর্যন্ত গাছে ফল পাওয়া যায়।রংপুরসহ স্থানীয় বাজারে পাইকারি বিক্রি করা হচ্ছে প্রতি পিচ সবজি ২৫থেকে ৩০টাকা দরে।এ দরে বিক্রি করে ৪ হাজার টাকা খরচ বাদে ইতিমধ্যে আয় হয়েছে ৩৬ হাজার টাকা।আরো এরকম টাকা বিক্রির আশা করা যাচ্ছে।এ সবজি খেতে খুব সুস্বাদু।ভাজি,মাছ ও মাংসে রান্না উভয়ভাবে খাওয়া যায়।এছাড়াও হোটেল-রেস্তোরায় সবজি এবং সালাত হিসেবে এর ব্যাপক চাহিদা।আগামিতে আরো অধিক জমিতে চাষাবাদের পরিকল্পনা গ্রহন করা হয়েছে।অন্যান্য কৃষকেরাও এ সবজি চাষে একই কথা বলেন।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা লোকমান আলম বলেন,স্কোয়াশ উচ্চ ফলনশীল কুমড়ার একটি ইউরোপীয় জাত।যা খেতে অত্যান্ত সুস্বাদু, এবং অতিপুষ্টিকর।ডায়াবেটিস,ক্যানসার ও হার্টের রোগীদের জন্যও বেশ উপকারি।বিদেশি মূল্যবান সবজি হিসেবে স্কোয়াশ এখন বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় চাষ হচ্ছে।যা দেখে এ এলাকার কৃষকেরাও এর আবাদ শুরু করেছেন।যা চাষাবাদ করে তারা ভাল লাভবান হওয়ার পাশাপাশি বাজারে সবজির চাহিদা মিটাচ্ছেন।আর এ স্বল্পমেয়াদি ফসল উৎপাদন ব্যয়ের তুলনায় আয়ের পরিমান প্রায় ৬গুন বেশি।তাই আগামিতে ফসলটি বানিজ্যিকভিত্তিতে উৎপাদনের জন্য কৃষককে উদ্বুদ্ধকরণ ও সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করা হবে।
মন্তব্য