মোঃ আরাফাত তালুকদার জেলা প্রতিনিধি পটুয়াখালী>>> আওয়ামীলীগ সরকারের পতনের পর ৫ আগষ্ট পরবর্তী পটুয়াখালী জেলা শহরের বিভিন্ন সামাজিক, সেচ্ছাসেবী সংগঠন গুলো বিএনপির নেতারা দখলে নিলেও এবার দখল হলো পটুয়াখালী জেলায় ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রি।ব্যবসায়ীদের প্রতিনিধিত্ব করা এই সংগঠনটি অচলবস্থা দূর করতে সম্প্রতি প্রশাসক নিয়োগের প্রক্রিয়া শুরু করতে উদ্যোগ নেয় বানিজ্য মন্ত্রণালয়।তবে এরই মধ্যে ১লা নভেম্বর জেলা বিএনপির আহবায়ক,সদস্য সচিব সহ সিনিয়র নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত থেকে বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে চেম্বার অব কমার্স এর নতুন কমিটি ঘোষনা করেন এবং শপথ গ্রহন অনুষ্ঠিত হয়।এই ঘটনা প্রকাশের পর পরই শহর জুড়ে আলোচনা সমালোচনার সৃষ্টি হয়।অনেকেই বলছেন ‘বিগত বছর গুলোতে আওয়ামীলীগ সরকার যে রুপে ব্যবসায়ীদের এই সংগঠন দখলে নিয়েছিল একই রুপে আবারো দখল হলো সংগঠনটি।খোঁজ নিয়ে জানযায়, ২০২৩-২৪ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরে পটুয়খালী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির বর্তমান সভাপতি ছিলেন আবুল কালাম আজাদ। তবে গত ৫ আগষ্টের পরে তার পরিচালনা পর্ষদসহ সবাই আত্মগোপনে থাকায় সংগঠনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পরে।এতে গত ১৭ অক্টোবর সংগঠনটির সাবেক পরিচালক ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আলী খান কবির অবৈধ কমিটির পাঁয়তারা বন্ধ করার দাবি জানিয়ে এবং প্রশাসক নিয়োগ অথবা এডহক কমিটি গঠনের জন্য বানিজ্য মন্ত্রনালয় এর মহাপরিচালক বরাবর একটি আবেদন করেন।এরই পরিপ্রেক্ষিতে, গত ২২ অক্টোবর আবুল কালাম আজাদ ও তার নির্বাচন কমিশনার (জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক) আব্দুল মান্নানকে কারন দর্শানোর নোটিশ দেন।একই তারিখে পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসককে সার্বিক অবস্থার উপর একটি তদন্ত প্রতিবেদন দেয়ার নির্দেশ দেন।এই চিঠির প্রেক্ষিতে পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের একজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট এ বিষয়ে তদন্ত করছে।তবে,এরই মধ্যে বানিজ্য মন্ত্রনালয় এর নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে গত ১ নভেম্বর রাতে পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির কার্যালয়ে এক অনুষ্ঠান করে ২০২৩-২৪ ও ২০২৫-২৬ অর্থবছরের নতুন করে কমিটি ঘোষনা করা হয়।দাবী করা হয় বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় এই কমিটির সবাই নির্বাচিত হয়েছেন।কমিটিতে পটুয়াখালী পৌর বিএনপির সভাপতি মো. কামাল হোসেনকে সভাপতি করে ২১ সদস্যের একটি পরিচালনা পর্ষদ কমিটি ঘোষণা করেন।এ ব্যাপারে সাবেক পরিচালক ও জেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক তৌফিক আলী খান কবির বলেন,‘আমার বাবা পটুয়াখালী চেম্বর অব কামার্স এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ছিলেন। ব্যবসায়ীদের স্বার্থে আমি বানিজ্য মন্ত্রনালয়ে দরখাস্ত দেই এবং মন্ত্রনালয় তদন্তের জন্য নির্দেশনা দেয়।সেখানে নির্দেশনাকে উপেক্ষা করে আওয়মীলীগের মতো নির্বাচন ছাড়াই দখল করে নেয়া হলো।যেখানে দলের হাইকমান্ড দলের নেতাকর্মীদের দখল বানিজ্য থেকে বিরত থাকতে নির্দেশনা দিয়েছে সেখানে এটি কোনো ভাবে কাম্য নয়।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে পটুয়াখালী চেম্বার অব কমার্স এর সভাপতি দাবী করা মো. কামাল হোসেন বলেন,‘ আবুল কালাম আজাদ অবৈধভাবে ছিলেন।তিনি হাইকোর্ট এ একটি মামলা করেছিলে সেই মামলা খারিজ হয়েছে।আমরা ডিসি সাহেব এর কাছে কাগজ পত্র দিয়ে এসেছি।চেম্বারের সভাপতি গিয়াস উদ্দিন, তিনি রেজুলেশন এর মাধ্যমে নির্বাচন কমিশন গঠন করে নির্বাচন দিয়েছে এতে কেউ প্রতিদ্বন্ধিতা করেনি।বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় আমরা নির্বাচিত হয়েছি।এদিকে গত ৫ আগষ্ট এর পর থেকে পটুয়াখালী জেলা অওায়ামীলীগের সদস্য ও চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সাবেক সভাপতি গিয়াস উদ্দিন আত্মগোপনে রয়েছেন।এ বিষয় জানতে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।তবে বর্তমান সভাপতি আবুল কালাম আজাদ বলেন,’ আমি বর্তমান সভাপতি হিসেবে মন্ত্রণালয় থেকে কিছুদিন আগে আমাকে কারন দর্শানোর নোটিশ দিয়েছে।আমি উত্তর ও দিয়েছি।সেখানে নতুন কমিটি কিভাবে হলো আমি বলতে পারছি না। পটুয়াখালীর জেলা প্রশাসক আবু হাসনাত মোহাম্মদ আরেফীন বলেন, ‘চেম্বার অব কমার্স এর কমিটি গঠনের বিষয় আমাদের অবহিত করা হয়নি।মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে আমরা তদন্ত করছি। তদন্ত প্রতিবেদনের মধ্যে এসব বিষয় উল্লেখ করা হবে।
মন্তব্য